মেঘরাজ্যের সীমানায় এসে চিন্তায় পড়ে গেলো অচিনপুরের রাজপুত্র রঞ্জনকুমার।
বজ্ঞে বুড়ো তো পরিস্কার বলেছিলো যে রাজকন্যা বীরবালাকে নিয়ে দুষ্টু
খোক্কসটা মেঘরাজ্যের ওপারেই গা-ঢাকা দিয়েছে। কিন্তু মেঘরাজ্যের সীমানা
প্রায় শেষ হতে চললো, এখনো পর্যন্ত খোক্কস তো দূরের কথা, একটা শুঁয়োপোকার
অবধি দেখা মিললো না। কী করবে, কী করবে ভাবতে ভাবতে রঞ্জনকুমার গিয়ে পৌছোলো
মেঘশিশুদের খেলার মাঠে। সেখানে ছোট-বড়ো, সোনালী, সাদা, কালো নানান রকমের
মেঘেদের ছানারা খেলাধূলো করছিলো। এক গালফুলো কালো মেঘের খোকা কে সে শুধোলো,
“ বলি ও মেঘের পো, রাজকন্যা বীরবালা কে দেখেছ নাকি এখানে ? দুষ্টু খোক্কস
তাকে ধরে নিয়ে এসেছে ? দেখেছ কী তাকে ?”
মেঘের খোকা ঠোঁট ফুলিয়ে বললো,
“আমি জানিনে, আলো পরীদের শুধিয়ে দেখতে পারো। তারা সুয্যি মামার সাথে সাথে পুরো
দুনিয়ায় ঘুরে বেড়ায় কিনা, তারাই জানবে।“
“ তা, আলো পরীদের দেখা পাবো কোথায় বলো তো ?”
মেঘের খোকা তো হেসেই অস্থির,
“ এমা, তাও জানো না.... সেই যেখানে রামধনু তৈরী হয়, আলো পরীরা বৃষ্টি ফোঁটার
প্রিজমে সাদা আলোর বাঁধন খুলে সাতরঙা আলোর সুতো তৈরী করে আর তারপর রামধনু বোনে
একটু একটু করে। ওখানে যাও বরং, আলো পরীদের সব্বাই কে পেয়ে যাবে।“
রঞ্জনকুমার ভারী লজ্জা পেয়ে একটুখানি মাথা চুলকে বললো,
“ মানে বলছিলাম কী, ওই যে কী বলে রামধনুর কারখানা কোথায় তা আমি জানি নে, যদি
তুমি একটু বাতলে দিতে পারো ...”
মেঘের খোকা কোমরে হাত দিয়ে, রেগে গিয়ে বললো,
“ অ্যাইয়ো, তুমি সত্যি সত্যি রাজকুমার তো, আমার কিন্তু বাপু একটুও বিশ্বাস হচ্ছে
না!”
“ কেন, কেন, বিশ্বাস হচ্ছে না কেন ?"
“ রূপকথার সব গল্পে তো পড়েছি যে রাজপুত্তুর সবসময় সব কিছু জানে, তাদের খিদে
নেই, তেষ্টা নেই, বুকে ভয় বলে কিচ্ছুটি নেই, তাদের কাতুকুতু লাগে না, কান্না
পায় না হ্যানত্যান আরোও কত কিছু । তা তোমাকে দেখে তো তেমন কিছুই মনে হচ্ছে না।
রামধনুর কারখানা কোথায় তাও জানো না, কেমনধারা রাজপুত্তুর তুমি !